সমগ্র বিশ্বে ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব আলোচনা করো

সমগ্র বিশ্বে ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব আলোচনা করো
সমগ্র বিশ্বে ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব আলোচনা করো।

সমগ্র বিশ্বে ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাবসমূহ

যুদ্ধকালীন অস্থায়ী ব্যবস্থার স্থায়িত্ব প্রদান: ইতিহাসবিদ হার্টম্যান ঠান্ডা লড়াইয়ের পরিণতি হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সাময়িক ব্যবস্থাগুলির চিরস্থায়ী ব্যবস্থায় পরিণত হওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। যুদ্ধ চলাকালীন ইয়াল্টা সম্মেলনে জার্মানিকে সাময়িকভাবে চারটি ভাগে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ঠান্ডা লড়াইয়ের আবর্তে পড়ে সেই বিভাজন স্থায়িত্ব লাভ করে। ঠান্ডা লড়াইয়ের শেষ পর্যায়ে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

রাজনীতিতে দ্বিমেরুকরণের সূচনা: প্রাধান্য প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা ও রাশিয়া-র মধ্যে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, তা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বিমেরুকরণের জন্ম দিয়েছিল।

বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তায় সংকট: আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ না হলেও ছায়া যুদ্ধের বাতাবরণ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি। ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যেমন- ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কোরিয়া যুদ্ধ ইত্যাদি। এই সকল সংঘর্ষে আমেরিকা ও রাশিয়া প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ার ফলে সংঘর্ষ ক্রমশ জটিল আকার

আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে সংকট: ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাবে বিভিন্ন দেশের ধারণ করে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রও প্রভাবিত হয়েছিল। প্রত্যেক রাষ্ট্রই নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষার তাগিদে সামরিক খাতে সর্বাধিক ব্যয়বরাদ্দ করে। ফলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়।

পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি :
ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধিতে তৎপর হয়ে ওঠে। এর ফলে সমগ্র বিশ্ব পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় ভীত হয়ে পড়ে।

আঞ্চলিক সামরিক জোটের উদ্ভব: ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে পরস্পরবিরোধী একাধিক সামরিক জোটের উদ্ভব ঘটে। যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অনুগত দেশগুলিকে নিয়ে গড়ে তোলে সামরিক জোট ন্যাটো (NATO)। এর প্রত্যুত্তরে রাশিয়া তার অনুগামী দেশগুলিকে নিয়ে গড়ে তোলে ওয়ারশ চুক্তি (Warsaw Pact)। এই সকল সামরিক জোট বিশ্বশান্তির পক্ষে মোটেই কাম্য ছিল না।

Leave a Comment