![]() |
সুলতানি যুগের বিভিন্ন সুফি সম্প্রদায়ের পরিচয় দাও |
খ্রিস্টীয় নবম ও দশম শতাব্দীতে ভক্তিবাদের মাধ্যমে হিন্দুধর্মে যখন উদারনৈতিক সংস্কার চলছিল, তখন ইসলাম ধর্মেও এক উদারনৈতিক মতবাদের প্রচার শুরু হয়। এই মতবাদ সুফিবাদ নামে পরিচিত।
বিভিন্ন সুফি সম্প্রদায়
আরবদের সিন্ধু জয়ের পূর্বেই পাঞ্জাবে সুফিবাদ প্রচারিত হতে থাকে। দ্বাদশ শতকের মধ্যেই সুফিবাদীরা ১২টি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। তার মধ্যে ‘চিশতি’ ও ‘সুহরাবর্দি’ সম্প্রদায় সুলতানি যুগে বিশেষ প্রাধান্য লাভ করেছিল।
চিশতি সম্প্রদায়
খাজা মইনুদ্দিন চিশতি খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতকের শেষভাগে চিশতি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সমাজের নিম্নবর্গের নির্যাতিত মানুষদের মধ্যে ধর্মমত প্রচার করতেন। তাঁর সহজ-সরল জীবনযাপন ও সহনশীল নীতির জন্য হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ক্রমশ এই সম্প্রদায়ের প্রভাব সমগ্র উত্তর ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই সম্প্রদায়ের বিখ্যাত সন্ত ছিলেন শেখ নিজামউদ্দিন আউলিয়া। তাঁর শিষ্য শেখ নাসিরউদ্দিন ‘চিরাগ-ই-দিল্লি’ বা ‘দিল্লির আলো’ নামে পরিচিত ছিলেন।
সুহরাবর্দি সম্প্রদায়
সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শেখ শিহাবউদ্দিন সুহরাবর্দি। মূলত পাঞ্জাব, মুলতান ও বাংলায় সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ ছিল। এই সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট সন্ত ছিলেন হামিদউদ্দিন নাগোরি। চিশতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে এই সম্প্রদায়ের নীতিগত ও কার্যপদ্ধতিগত কিছু প্রভেদ ছিল। যেমন-চিশতি সম্প্রদায় অর্থ, সম্পদ ও রাজনীতি থেকে দূরে থাকত। কিন্তু সুহরাবর্দি সম্প্রদায় অর্থ-সম্পদ অর্জন ও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগদানের পক্ষপাতী ছিল।
অন্যান্য সম্প্রদায়
পঞ্চদশ শতকে ভারতে কাদিরি, শাত্তারি, ফিরদৌসি, নকশবন্দি এবং আরও কয়েকটি সুফি সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ঘটে।