![]() |
উদাহরণসহ ধ্বনিমূল ও সহধ্বনির সম্পর্ক নির্ণয় করো। |
ধ্বনিতত্ত্বের আলোচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় হল ধ্বনিমূল ও সহধ্বনি। এই ধ্বনিমূল ও সহধ্বনির সম্পর্ককে তিনভাগে ভাগ করা যায়- [১] ধ্বনিমূলগুলি যদি হয় এক-একটি পরিবার, সহধ্বনিগুলি তবে সেই পরিবারের সদস্য। একই পরিবারের সদস্য হতে গেলে দুটি শর্তপূরণ করতে হয়। প্রথমত, তাদের মধ্যে উচ্চারণগত সাদৃশ্য থাকা দরকার। দ্বিতীয়ত, সহধ্বনিগুলি একটির বদলে অন্যটি উচ্চারিত হবে না অর্থাৎ উচ্চারণগত অবস্থানের দিক থেকে তাদের পরস্পরের পরিপূরক হতে হবে। কোনো পরিবারের সদস্যসংখ্যা কম, আবার কারও-বা বেশি। উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যাক। ধরা যাক, ‘ল্’ একটি ধ্বনিমূল। এই ‘ল’ ধ্বনিকে তিনটি আলাদা আলাদা শব্দের ব্যবহার করা হল- ‘লংকা’, ‘উলটো’ আর ‘আলতা’। লক্ষ করলে দেখা যাবে, ‘লংকা’ উচ্চারণের সময় জিভ দাঁতের পিছনের মাড়িতে ঠেকে। আবার, ‘উলটো’ উচ্চারণ করার সময় জিভ ঠেকে যায় মূর্ধা বা তালুতে। অথচ ‘আলতা’ উচ্চারণের ক্ষেত্রে জিভ চলে যায় সামনের পাটির দাঁতের পিছনে। উচ্চারণভেদে ‘ল্’-এর তিনটি অবস্থান রয়েছে। সুতরাং ‘ল্’-এর এই তিনটি সহধ্বনি ‘ল্’ ধ্বনিমূলের পরিবারভুক্ত।
[২] ধ্বনিমূল একটি কল্পনামাত্র। বাস্তবে ‘ল্’-এর কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু এর তিনটি সহধ্বনি আমরা সহজেই প্রত্যক্ষ করতে পারি।
[৩] ধ্বনিমূল ভাষায় অর্থের পার্থক্য করতে পারে। কিন্তু সহধ্বনি তা পারে না। যেমন-‘কাল’ শব্দে ‘ল্’ ধ্বনিমূলের পরিবর্তে ‘ক্’ ধ্বনিমূল উচ্চারণ করলে আমরা ভিন্ন অর্থের একটি শব্দ পাই। কিন্তু সহধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে উচ্চারণের তফাত হলেও অর্থ একই থাকে।