চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো।


প্রারম্ভিক জীবন, প্রতিষ্ঠা ও সাফল্য :
চিকিৎসাশাস্ত্রে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের নামটি আজও মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। অসাধারণ মেধা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এই দেশব্রতী মানুষটি আজও বাঙালির গর্ব। তাঁকে আপামর বাঙালি এক স্বনামধন্য চিকিৎসকের পাশাপাশি নব বাংলার রূপকার হিসেবে জানেন। ডা. রায় ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এল এম এস ও এম বি পাস করেন এবং ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে এম ডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি বিলেতযাত্রা করেন এবং সেখান থেকে এম আর সিপি (লন্ডন) ও এফ আর সি এস ডিগ্রি লাভ করেন। বিলেতফেরত এই খ্যাতিমান চিকিৎসক দেশে ফিরে এসে কলিকাতা মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করতে শুরু করেন। পরে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে তিনি মেডিসিনের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সাফল্য ডা. রায়কে খ্যাতির শিখরে নিয়ে যায়।

চিকিৎসক ও দেশব্রতী : এই বিখ্যাত চিকিৎসক শিক্ষাকে ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও চিত্তরঞ্জন দাশের অনুপ্রেরণায় স্বরাজ্য পার্টির প্রার্থী হয়ে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথকে পরাজিত করেন। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলনের একনিষ্ঠ যোদ্ধা ডা. বিধানচন্দ্র রায় হয়ে কারাবাস করেন। তিনি জীবনে বহু প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদ সামলেছেন। ডা. রায় বিভিন্ন সময় কলকাতার মেয়র, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদ সামলালেও চিকিৎসক ও শিক্ষকের দায়িত্বপালনে কখনও অনীহা দেখাননি।

বিবিধ কর্মোদ্যেগ ও অবদান :
বিধানচন্দ্র রায়ের উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আই আই টি খঙ্গপুর স্থাপন, বাংলায় ডি ভি সি-এর সদর দপ্তর স্থাপন, দুর্গাপুর ইস্পাত শিল্পের আধুনিকীকরণ এবং কল্যাণী শহরকে কলকাতার বিকল্প উপনগরী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ এখনও জনমানসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। এইসব কাজের জন্যই তাঁকে নববাংলার রূপকার বলা হয়।

Leave a Comment