![]() |
জোড়কলম শব্দ সম্পর্কে আলোচনা করো। |
রূপের মিশ্রণ এক ধরনের নিষ্পাদন প্রক্রিয়া। এই মিশ্রণকে বলা হয় পোর্টম্যানটু ওয়ার্ড বা বাংলায় জোড়কলম শব্দ। যখন একটি শব্দের বা তার অংশবিশেষের সঙ্গে অন্য শব্দ বা তার অংশবিশেষ যোগ করে একটি নতুন শব্দ তৈরি হয়, তখন সেই শব্দকে বলে ‘জোড়কলম শব্দ’। যেমন: আরবি ‘মিন্নৎ’ শব্দের প্রথমাংশের সঙ্গে সংস্কৃত ‘বিজ্ঞপ্তি’ শব্দের শেষাংশ যোগ করে করা হয়েছে ‘মিনতি’, রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করেছেন- ঝট্ + তড়িৎ ঝটিৎ, এখন বহু প্রচলিত ধোঁয়া কুয়াশা ধোঁয়াশা, India + European = Indo-European-এইসব শব্দগুলি জোড়কলম শব্দের উদাহরণ।
বাংলায় সুকুমার রায়ের কবিতায় জোড়কলম শব্দের চমৎকার নিদর্শন পাওয়া যায়। ‘হাঁসজারু’ (হাঁস সজারু) ও ‘বকচ্ছপ’ (বক্ + কচ্ছপ) শব্দ দুটি আমাদের বহু পরিচিত। বিমিশ্রণ ও জোড়কলমের মধ্যে গঠন প্রক্রিয়ার দিক থেকে সাদৃশ্য আছে, পার্থক্য লক্ষ করা যায় শুধুমাত্র অর্থগত দিক থেকে। বিমিশ্রণে যে দুটি শব্দের যোগ হয় সেই শব্দ দুটির অর্থ প্রায় একইরকম নয়, বা শব্দ দুটি প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেমন: ‘আনারস’ ও ‘রস’ শব্দ দুটি একইরকম বা কাছাকাছিও নয়, শুধুমাত্র ভাবের অনুষঙ্গ আছে। কিন্তু জোড়কলম শব্দে যে দুটি শব্দের যোগসাধন ঘটে সেই শব্দ দুটির অর্থ প্রায় একইরকম বা শব্দ দুটি প্রায় সমান গুরুত্বসম্পন্ন। যেমন: ধোঁয়া ও কুয়াশা প্রায় একইরকম জিনিস, দুয়ে মিলে হয়েছে ধোঁয়াশা।