দুর্গতি ও প্রতিরোধের নাটক হিসাবে ‘আগুন’ নাটকের সার্থকতা বিচার করো

দুর্গতি ও প্রতিরোধের নাটক হিসাবে ‘আগুন’ নাটকের সার্থকতা বিচার করো।

দুর্গতি ও প্রতিরোধের নাটক হিসাবে 'আগুন' নাটকের সার্থকতা বিচার করো
দুর্গতি ও প্রতিরোধের নাটক হিসাবে ‘আগুন’ নাটকের সার্থকতা বিচার করো

বাংলা নাট্যসাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বিজন ভট্টাচার্য বিরচিত ‘আগুন’ নাটকটি মন্বন্তরের পটভূমিতে উত্তাল, অশান্ত, বিশৃঙ্খল, অগ্নিগর্ভ সময়কে ধারণ করে আছে। যখন বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে বিরাট সংকট, রাজনীতির ক্ষেত্র জুড়ে প্রকাণ্ড হতাশা, পরাধীনতার যন্ত্রণা, দুর্ভিক্ষের হাহাকার, কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যে বাংলার সাধারণ জনজীবন বিধ্বস্ত- সেই সময় স্তিমিতপ্রায় সংস্কৃতিকে জাগিয়ে তুলে, সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে নব দিশায় উন্মোচিত করতে তরুণ তুর্কি বিজন ভট্টাচার্যের বৈপ্লবিক পদচারণা। পাঁচটি দৃশ্যসম্বলিত ‘আগুন’ নাটকে প্রত্যেকটি পরিবারের সমস্যা এক-অভাব। খাদ্যের অভাব, চালের অভাব।

“কিন্তু চাল, চালের কী হবে!“- সেজন্য হাপিত্যেশ হয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার লাইনে দাঁড়ানো। ভুখা মানুষের এই মিছিলে জাতিগত ও সম্প্রদায়গত বিভেদ ভুলে গিয়ে সকলে একই পঙ্ক্তিতে (লাইনে) এসে মিলেছে- “লুঙ্গি, টিকি, পৈতে, টুপি সব একাকার হয়ে গেছে।”

মন্বন্তরপীড়িত বাংলার সীমাহীন দুর্ভোগ, জীবনযন্ত্রণা এবং জীবনসংগ্রামকে মূর্ত করে তুলেছেন নাট্যকার।

“এই তো দ্যাখো না সামান্য দু-সের চালের জন্যে কি নাজেহালটাই না হতে হচ্ছে।”

মানুষের সমস্ত সহ্যের বাঁধ যখন ভেঙে যায়, সরতে সরতে মানুষ যখন খাদের কিনারে চলে আসে তখন সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও সংগ্রামের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া আর উপায় থাকে না। মানুষের নতুন করে বেঁচে ওঠার সেই মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাণের শপথ-

“এখন বাঁচতে হবে। বাঁচতে হলে মিলিমিশে থাকতে হবে ব্যাস্।”

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment