ফটিক মাখনলালকে সশব্দে চড় মেরেছিল কেন বুঝিয়ে লেখো

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ ছোটোগল্প থেকে জানা যায় মাখনলাল ফটিকের ছোটো ভাই হলেও স্বভাবধর্মে দাদার ঠিক বিপরীত। ফটিক যখন তার দলবল নিয়ে নদীর ধারে পড়ে থাকা এক প্রকাণ্ড শালকাঠকে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার উপক্রম করছিল, তখন তাদের ওই আনন্দদায়ক খেলাকে পণ্ড করার অভিপ্রায়ে মাখনলাল সেই গুঁড়ির উপর গিয়ে বসে। ফটিক মাখনলালকে সাবধান করে বলে ওঠে,-“দেখ, মার খাবি! এইবেলা ওঠ।”
কিন্তু মাখনলাল দাদার সতর্কবাণীতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হওয়ার পরিবর্তে আরও একটু নড়েচড়ে কাঠের উপর আসনটি স্থায়ীরূপে দখল করে। ছেলের দল ফটিকের নেতৃত্বে তাদের খেলায় আরও একটু আমোদ যুক্ত করার অভিপ্রায়ে মাখনলালকে সুদ্ধ ওই কাঠ গড়িয়ে নিয়ে যেতে আরম্ভ করল। কিন্তু গুঁড়ি এক পাক ঘুরতে না ঘুরতে মাখনলাল মাটিতে পড়ে তৎক্ষণাৎ ফটিককে আক্রমণ করে বসল। ফটিকের নাকেমুখে আঁচড় কেটে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথ ধরল মাখনলাল।
মাখনলাল বাড়ি ফিরে দাদার নামে নালিশ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে বাঘা বাগদি এসে ফটিককে ধরে নিয়ে গিয়ে মায়ের সামনে হাজির করে। ফটিককে দেখামাত্র মা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বলেন- “আবার তুই মাখনকে মেরেছিস!” ফটিক মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলে ওঠে- “না, মারি নি।” মাখনলাল কিন্তু কোনোমতেই তার অভিযোগ থেকে সরে আসতে সম্মত নয়, সে পুনরায় অভিযোগ সমর্থন করে বলে-“হাঁ, মেরেছে।” বারংবার কনিষ্ঠ ভ্রাতা মাখনের মিথ্যা অভিযোগ ফটিকের কাছে অসহ্য ঠেকলে ফটিক দ্রুত গিয়ে মাখনকে সশব্দে চড় মেরে বসে।
আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ