বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো

বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।
এতকাল আমাদের দেশে ভাষাবিজ্ঞান আলোচনায় ভাষার কালানুক্রমিক পরিবর্তনই ছিল বিচার্য বিষয়। কিন্তু সাম্প্রতিক ইউরোপ ও আমেরিকার অনুকরণে আমাদের দেশেও কোনো একটি ভাষার সর্বজনীন ও সমকালীন রূপের বিচারই আলোচনার বিষয়ীভূত হয়ে থাকে। এই ধরনের ভাষা-বিষয়ক আলোচনাই ‘বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান’ নামে পরিচিত। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের জয়যাত্রা শুরু হয় এডোয়ার্ড স্যাপি ও ব্লুমফিল্ড কর্তৃক বোয়াজের প্রবর্তিত ধারাকে পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করার সময় থেকেই। যে ভাষার কোনো অতীত নিদর্শন নেই অথবা যে ভাষা এখনও পর্যন্ত লিপিবদ্ধ হয়নি সেই ভাষার আলোচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই শাখার মতে কোনো ভাষার আলোচনার প্রধান বিষয় চারটি-ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং শব্দার্থতত্ত্ব। ধ্বনিবিজ্ঞান আলোচনা করে কীভাবে বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারিত হয়। ধ্বনিতত্ত্বের আলোচনায় পাই কোনো একটি বিশেষ ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনিগুলির বিচারবিশ্লেষণ। রূপতত্ত্বের বিষয় হল পদের গঠন ও পদের চেয়ে ছোটো ভাষার একক রূপের নানান প্রযুক্তি। বাক্যতত্ত্বের বিষয় বাক্যের সার্বিক আলোচনা ও বিচারবিশ্লেষণ। আর শব্দার্থতত্ত্বের বিষয় হল শব্দের অর্থ পর্যালোচনা। ভাষার সংগঠনের আলোচনার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয় বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে। মানবদেহের সঙ্গে ভাষাকে তুলনা করলে ধ্বনি, ধ্বনিগুচ্ছ, রূপ, পদ, বাক্য ইত্যাদি হল সেই ভাষার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।

Leave a Comment