বাংলার চিকিৎসাবিজ্ঞানে রাধাগোবিন্দ করের অবদান আলোচনা করো

বাংলার চিকিৎসাবিজ্ঞানে রাধাগোবিন্দ করের অবদান আলোচনা করো
বাংলার চিকিৎসাবিজ্ঞানে রাধাগোবিন্দ করের অবদান আলোচনা করো।

প্রারম্ভিক জীবন

বর্তমান আর জি কর হাসপাতালটি যাঁর নামে নামাঙ্কিত, সেই রাধাগোবিন্দ কর ঊনবিংশ শতকের কলকাতার এক অন্যতম প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক ছিলেন। কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে পাস করে, মেডিকেল কলেজের তিন বছরের পাঠক্রম সমাপ্ত হওয়ার পর তিনি ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে যান। এরপর সেখানকার এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম আর সি পি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে প্র্যাকটিস শুরু করেন।

মাতৃভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞান চর্চার পুরোধা পুরুষ

ডা. কর ডাক্তারিকে শুধুমাত্র পেশা হিসেবে গ্রহণ করেননি। তাঁর অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশীয় ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা। তাই তিনি বেলগাছিয়া অ্যালবার্ট ভিক্টর কলেজ স্থাপনের পাশাপাশি বাংলা ভাষায় রচনা করেন একের-পর-এক চিকিৎসাবিজ্ঞানের বই। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি – হল ‘ধাত্রীসহায়’, ‘অ্যানাটমি’, ‘স্ত্রীরোগ চিকিৎসা’, ‘সংক্ষিপ্ত ভেষজতত্ত্ব’ প্রভৃতি। 

 কিংবদন্তি সমাজসেবক

ডা. কর কেবল একজন ডাক্তারই ছিলেন না, একজন সমাজসেবীও ছিলেন; তাই ডাক্তারি পেশাকে কাজে লাগিয়ে তিনি এই বিভাগের উন্নতিতে প্রায় সারাটা জীবনই ব্যয় করেছেন। উনিশ শতকের একেবারে শেষদিকে প্লেগ আক্রান্ত কলকাতায় পল্লিবাসীদের পাশে তিনি যেভাবে দাঁড়িয়েছিলেন, তা আজও ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তিনি বিদ্যাসাগরের মতো দানশীল ব্যক্তির নিষেধ সত্ত্বেও, জীবদ্দশাতেই নিজের সর্বস্ব ডা. রাধাগোবিন্দ কর দান করে দেশীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িতকরতে প্রায় দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেছিলেন। জীবদ্দশাতেই কিংবদন্তি এই মানুষটি দরিদ্রদের দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপনের জন্য নিজের বসতবাড়িটিকেও দান করে দিয়েছিলেন।

Leave a Comment