![]() |
বাংলা সংগীতের ধারায় কাজী নজরুল ইসলামের অবদান আলোচনা করো। |
বাংলা সংগীতের ধারায় কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
[১] প্রেম ও প্রকৃতি: নজরুলের অধিকাংশ গানেরই বিষয়ভাবনা প্রেম ও প্রকৃতি। ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি’ বা ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব’ এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
[২] ঋতু সংগীত: তাঁর যে-গানগুলিতে ঋতু প্রসঙ্গ এসেছে সেগুলি হল- ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’, ‘বর্ষাঋতু এল বিজয়ীর সাজে’ ইত্যাদি।
[৩] রাগাশ্রয়ী গান: বিভিন্ন রাগরাগিণীর ব্যবহার করে নজরুল অসংখ্য গান রচনা করেছেন। এ ছাড়া নিজে বেশকিছু রাগ উদ্ভাবন করেছেন। এক্ষেত্রে ‘ভোরের হাওয়া এলে’, ‘অঞ্জলি লহ মোর’ প্রভৃতি উল্লেখ্য।
[৪] লোকসংগীত: লোকসংগীতের আঙ্গিকে বাঁধা তাঁর গানগুলি অনবদ্য। তা ছাড়া লেটোর গান ও সঙের গানও উল্লেখযোগ্য। এ প্রসঙ্গে ‘ওই রাঙামাটির পথে লো’, ‘পদ্মার ঢেউরে’ প্রভৃতি গানগুলির কথা উল্লেখ করা যায়।
বিশিষ্টতা ও বৈচিত্র্য
এ ছাড়াও নজরুল গজল, ইসলামিক সংগীত ও ভক্তিগীতিও রচনা করেছিলেন। তাঁর হাস্যরসাত্মক গান, প্যারোডি গান, হিন্দি গান এবং কোরাস ও মার্চ সংগীত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বিদেশি সুর গ্রহণেও ছিলেন সিদ্ধহস্ত, যেমন- ‘দূর দ্বীপবাসিনী’ (কিউবানসুর)। সেইসঙ্গে গীতিনাট্য, গীতি আলেখ্য ও চলচ্চিত্রেও তাঁর প্রভাব ছিল যথেষ্ট।
ব্যতিক্রমী স্বাতন্ত্র্য
নজরুলের গানে ভাষা ও সুরের সার্থক মেলবন্ধন ঘটেছিল। তাই সামান্য লোটোগায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, তিনি একাধারে গজল, শ্যামাসংগীত, ইসলামী সংগীত, ধ্রুপদ, ভক্তিগীতি ইত্যাদি সব ধরনের গানে অসামান্য সিদ্ধির সাক্ষর রেখে গেছেন। তাঁর গানের রোমান্টিক আবেদন, উদাত্ত উদার আবেগ এবং বাংলার মাটির স্পর্শ, তাঁকে সংগীতস্রষ্টা হিসেবে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।