বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান সম্পর্কে লেখো

বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান সম্পর্কে লেখো
বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান সম্পর্কে লেখো।

অধ্যাপক জীবনের সূত্রপাত

বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের একটি উক্তি থেকেই আমরা ড. মেঘনাদ সাহার বিজ্ঞানচর্চা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করা যায়। এই বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক বলেছিলেন, ‘সারা বিশ্বের বিজ্ঞান মহলে মেঘনাদ সাহা নিঃসন্দেহে জয় করে নিয়েছেন একটি সম্মানজনক স্থান’। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী এই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে নবগঠিত বিজ্ঞান কলেজে অধ্যাপনার কাজে যোগদান করেন এবং ডিএসসি ও পিআরএস হন।

গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক প্রতিভা

মেঘনাদ সাহার গবেষণার বিষয় ছিল রিলেটিভিটি, প্রেসার অফ লাইট ও অ্যাস্ট্রোফিজিক্স। ফিলজফিক্যাল ম্যাগাজিনে ১৯১৭ ও ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে যথাক্রমে ‘অন ম্যাক্সওয়েল স্ট্রেসেস’ ও ‘অন আয়োনাইজেশন ইন দ্য সোলার ক্রোমোস্ফিয়ার’-নামক নিবন্ধন দুটি প্রকাশিত হয়। ‘সূর্যের বর্ণমণ্ডলের আয়নীকরণ’ শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রবন্ধটি জ্যোতি বিজ্ঞান-পদার্থবিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। এ তত্ত্বটি পরে সাহার সমীকরণ নামে পরিচিত হয়। এর সাহায্যে তাপবিদ্যাবলয় ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন তারকার বর্ণালি ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়েছিল। আজও দেশে-বিদেশে তাঁর এই আবিষ্কার ও চর্চিত হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন গ্যালিলিওর পর জ্যোতির্বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ দশটি আবিষ্কারের মধ্যে সাহার এই আবিষ্কার অন্যতম।

অন্যান্য কর্মকাণ্ড

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই বৈজ্ঞানিক দামোদর উপত্যকার সংস্কার, বন্যা প্রতিরোধ, নদী পরিকল্পনা ও পঞ্জিকা সংস্কারের মতো কাজগুলিও করেছিলেন। এই মহান বিজ্ঞানীর উদ্যোগে ‘ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’, ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স’-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি একে একে তৈরি হয়। তাঁর বইগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-‘The principle of Relativity’, ‘Treatise on Heat’ প্রভৃতি।

Leave a Comment