![]() |
‘বিভাব’ কথাটির সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করো। |
‘বিভাব’ কথাটির অর্থ
‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ বিশেষ ভাব। ভারতীয় অলংকারশাস্ত্রমতে বিভাব হল নাটকের রসনিষ্পত্তির কারণ। ‘নাট্যশাস্ত্র’ গ্রন্থে ভরত বলেন বিভাব হল সেই কারণ যার জন্য দর্শকের মনে আনন্দ, দুঃখ, হাসি, রাগ ইত্যাদি বিশেষ বিশেষ ভাবের সৃষ্টি হয়।
নামকরণের উদ্দেশ্য
সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্রের পন্ডিতদের মতে, বিভাবের কারণে নাটক দেখার পর দর্শকের মনে রস সৃষ্টি হয়। নাট্যকার শম্ভু মিত্র দর্শকের মনে সার্থকভাবে রস জাগাতে চান বলে নাটকের ‘বিভাব’ নামকরণ করেন।
নাটকের বিষয়বস্তু
‘বিভাব’ নাটকে দেখা যায় বাঙালির ‘কাঁদুনে জাত’-এর অপবাদ ঘোচাতে নাটকের প্রধান চরিত্র শম্ভু ‘হাসির খোরাক’ খুঁজতে অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে এসে পৌঁছোন। নাটকের জনপ্রিয় বিষয় খুঁজতে প্রেমের দৃশ্য, কখনো রাজনৈতিক প্রসঙ্গ এনেও হাস্যরসের উদ্রেক হয় না। শেষপর্যন্ত নাটকে হাসির বিষয়বস্তুর সন্ধানে প্রতিদিনের বাস্তব জগতের সম্মুখীন হয়ে শম্ভু ও অমর দেখেন অন্নবস্ত্রের দাবিতে এগিয়ে আসা মিছিলের সামনে প্রতিবাদী একজন ছেলে ও একজন মেয়ে পুলিশের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে শম্ভুর বিদ্রূপাত্মক উক্তি ‘এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?’
সার্থকতা বিচার
‘বিভাব’ নাটক তার গতিপথের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পাঠকমনে সময়ের যন্ত্রণা আর রাজনৈতিক অস্থিরতার যে কঠোর আঘাত আনে, তাতেই পাঠকের মনে করুণ রস সৃষ্টি হয়। তাই নাটকের ‘বিভাব’ নামকরণ সার্থক এবং যথোপযুক্ত।