![]() |
‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। |
ভূমিকা
সাহিত্যে নামকরণ পাঠক এবং সাহিত্যবস্তুর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে। আলংকারিকদের মতে সাহিত্যের নামকরণ তিন ধরনের- বিষয়কেন্দ্রিক, প্রধান চরিত্রকেন্দ্রিক এবং ব্যঞ্জনাধর্মী।
বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটিতে ধর্মীয় বিভেদের কারণে মানবিকতার অবমাননাকে তুলে ধরেছেন।
শীতের ঝড়বাদলের একদিন বাজারের চা-দোকানের আড্ডার মাঝে চলে আসা এক থুথুড়ে বুড়িকে ঘিরে গল্পটি রচিত। গল্পের পরিণতিতে বুড়ি প্রকৃত মৃত না জীবিত তার মীমাংসার পরিবর্তে বুড়ির ধর্মীয় পরিচয় গ্রামের মানুষের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। তাকে ঘিরেই হিন্দু ও মুসলমান গ্রামবাসীরা লিপ্ত হয় ধর্মীয় কলহে।
সার্থকতা বিচার
লেখক আলোচ্য গল্পে ধর্ম নয়, ধর্মীয় বিবাদকে বড়ো হয়ে উঠতে দেখিয়েছেন। গল্পে গ্রামবাসীদের মধ্যে শুরু হওয়া ধর্মীয় বিবাদের কোনো সমাধান নেই, তা অর্থহীন। তাই যখন বুড়ি শববাহী চ্যাংদোলা থেকে ঠেলে উঠে সব বিবাদ উপেক্ষা করে দূরে চলে যায় তখন পিছনে রেখে যায় ভারতবর্ষের আবহমান ধর্মীয় বিভেদের শূন্যতাকে। এভাবেই বুড়ির আচরণে ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য প্রকাশিত হয়। বিষয়ের অন্তর্নিহিত এই ব্যঞ্জনাটি গল্পের নামকরণে স্পষ্ট। তাই গল্পের ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ যথার্থ ও সার্থক।